এক সপ্তাহের স্কুলের ছুটিতে দোলা কৃষ্ণ নগরে গিয়েছিল। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি ও বারো দোলের মেলা দেখে গিয়েছিল অধরের মিষ্টির দোকানে। সরপুরিয়া-সরভাজার কী স্বাদ! সেখান থেকে সোজা ঘূর্ণি। ওখানে মাটির হরেক জিনিস পাওয়া যায়। সেখান থেকে দোলা মাটির মিষ্টি, পুতুল, সবজি কেনে। ওঁর সবচেয়ে পছন্দের জিনিস ছিল মাটির মিষ্টিগুলো। একবারে আসল মিষ্টির মতো দেখতে।
ছুটির পর স্কুল খুলল। দোলার মা সুস্বাদু খাবার টিফিন দিলে রিয়া ভাগ বসাত। দোলা যদিও কিছু মনে করে না। বন্ধুদের সঙ্গে খাবার ভাগ করে খেলে ভালোই লাগে। একদিন দোলা মাকে বলেছিল রুটি, আলুর তরকারি আর মিষ্টি টিফিনে দিতে। সেদিন স্কুলে যেতেই রিয়া বলে, “আজকে কী টিফিন এনেছিস?" দোলা বলে “রুটি, তরকারি আর মিষ্টি।" রিয়া মুচকি হাসলো। ওয়াশরুম থেকে এসে দোলা দেখলো ব্যাগটা কেমন যেন হেলে আছে। মনে হল বেঞ্চ ঠেলাঠেলিতে হয়তো এমন হয়েছে। মিষ্টির টিফিন বক্সটা খুলে দেখে মিষ্টি ভ্যানিশ। প্রিয় মিষ্টি না থাকায় দোলা খুব কষ্ট পায়। রুটি তরকারি খেতে খেতে বলে ‘কষ্ট পেয়ে লাভ নেই।মা কাজের মধ্যে দিতে ভুলে গেছে মনে হয়।' পরের দিন একই টিফিন ছিল। স্কুলে যেতেই রিয়ার একই প্রশ্ন। দোলার একই উত্তর। রিয়া বলল “আমাকে মিষ্টি দিস।" দোলা বলে, “অল্প দেব।" শুনে রিয়ার মুখ ভার হয়ে গেল। টিফিন ব্রেকে দোলা হাত ধুয়ে এসে লক্ষ্য করল রিয়া ওঁর ব্যাগ খুলে মিষ্টি খাচ্ছে। অন্য বন্ধুরা কেউ লক্ষ্য করেনি, কারণ সবাই গ্রুপ করে আরেকটা গ্রুপকে কালকে এপ্রিল ফুল করার প্ল্যানে ব্যস্ত। দোলা মুখে কিছু বলল না, মনে মনে ভাবল রিয়াকে ওঁর চুরির শাস্তি দিতে হবে। পরের দিন টিফিনে কৃষ্ণনগর থেকে আনা মাটির মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিল। গিয়েই রিয়াকে হেসে বলে “রিয়া আজ আমি লুচি আর মিষ্টি এনেছি।" রিয়া ঠোঁট চাটল। তারপর টিফিন ব্রেকে রিয়া আবার মিষ্টি চুরি করে খেতে গেল। মিস্টি মুখে দিতেই ওয়াক তুলতে শুরু করেছে। পেছন থেকে গিয়ে দোলা বলে “কেমন বোকা বানালাম বল। তোর পয়লা এপ্রিল হ্যাপি হল না, তাই না?” তখন রিয়ার কাঁদো কাঁদো মুখ। রিয়াকে বোকা বানিয়ে চুরির শাস্তি দিয়ে দোলা হেসে উঠল।
অব্ধিজা চিকি