সৌমিরা থাকে কলকাতা শহরে। কিন্তু তার কাছে, তার গ্রামের বাড়ি নিশ্চিন্তিপুরের সেই বাড়িটাই ভালো। কারণ, সেখানে ভোর হতে না হতেই পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ, গবাদিপশুর হাম্বা হাম্বা ডাক , গ্রীষ্মের সময় পাকা আমের গন্ধে যেন চারিদিক ম-ম করে। বর্ষায় বৃষ্টিতে মাঠ ডুবে যায় আর সেই জল কাদাতে ছেলেরা ঝাঁপাঝাপি করে, কেউ নৌকা ভাসায়। আবার হেমন্তের শেষে সোনালী ধানে গ্রামের উঠোন গুলি ভরে থাকে। শীতে সরষের ক্ষেত গুলি হলুদ হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্রত,পালাপার্বণ হয়ে থাকে। যেমন ― বসুন্ধরা ব্রত, ভাদুলি ব্রত, মকর। খুব সাধারণ জিনিসে খুশি হওয়া শিশুদের ধুলোবালি নিয়ে খেলা দেখলে মন ভরে ওঠে। কিন্তু শহরে সেসব নেই বরং নানা যানবাহনের হর্ণের শব্দ, কলকারখানার ইঞ্জিনের শব্দ, প্লেন ওঠানামার শব্দে যেন কান বন্ধ হয়ে আসে। এছাড়াও আছে কারখানার ধোঁয়া, গাড়ির ধুলো ইত্যাদি। তাই সৌমি যখন গ্রামে গিয়ে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে একান্ত ভাবে মিশে যায়। তখন সে সহজ সরল বন্ধুদের সাথে খেলার পাশাপাশি কখনো বড় কাউকে সঙ্গে নিয়ে চলে যায় মাছ ধরতে বা পুকুরে , নদীতে স্নান করতে। এইসব করার জন্য সে তার বাবাকে বলে নিশ্চিন্তিপুরে ফিরে এসে থাকার কথা। কিন্তু সবার ইচ্ছে থাকলেও তার বাবার চাকরির জন্য তার এই শখটা আর পূরণ হল না।
-সৃজিতা মণ্ডল